উখিয়ায় চলছে ভয়াবহ পাহাড়া কাটার মহোৎসব। ফ্রি স্টাইলে পাহাড় কেঁটে মাটিভর্তি করে ট্রাক যোগে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যুচক্রের সদস্যরা। একের পর এক পাহাড় কর্তন ও পরিবেশ ধ্বংস করলেও উপজেলা প্রশাসন এবং বনবিভাগ সম্পূর্ণ নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ সচেতন মহলের। ফলে এলাকায় পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশা-পাশি পাহাড় সংরক্ষণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, অতি সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কাটার ধুম পড়েছে। সংঘবদ্ধ মাটি খেকোরা প্রকাশ্য পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির ব্যবসায় নেমেছে। প্রতিদিন অসংখ্য ট্রাক যোগে মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। কতিপয় বনবিভাগকে মোটা অংকের টাকার বিনিময় ম্যানেজ করে, গুরা মিয়া গ্যারেজ, উখিয়া সদর, ওয়ালাপালং, জালিয়াপালং, জুম্মাপাড়া, নিদানিয়া, ইনানী, থাইংখালী, পালংখালী, হলদিয়াপালংসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কর্তনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নে গুরা মিয়া গ্যারেজ সংলগ্ন একটি বিশাল আকৃতির পাহাড় কেঁটে বিরাণ ভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে। প্রভাবশালী একটি মহল মাটি কেঁটে ট্রাক যোগে নিয়ে যাচ্ছে। বিশাল এই পাহাড়টি কর্তনের ফলে যেকোন সময় কিংবা বর্ষা অথবা দুর্যোগকালীন সময় ধসে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে এমন আশংকা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসীরা।
রুমখাঁ হাজীর পাড়া গ্রামের মৃত শাহাব উদ্দিন ড্রাইভারের স্ত্রী আয়েশা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তাদের জোত স্বত্ত্বদখলীয় জায়গায় অবস্থিত বিশাল পাহাড়টি কু-দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় কু-চক্রীমহলের। গুরা মিয়া গ্যারেজ এলাকার কয়েজন প্রভাবশালী সোলতান, আব্দুল সালাম ও সিরাজ মিয়ার নেতৃত্বে গত কয়েকদিন ধরে ১০/১২ জন শ্রমিক দিয়ে উক্ত পাহাড়টি কেঁটে সাবাড় করা হচ্ছে। ট্রাক দিয়ে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে প্রতিদিন। এ ব্যাপারে বাঁধা প্রদান করা হলে উল্টো আমাদেরকে হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে গত ১৮ মার্চ উখিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে গতকাল রবিবার বিকেলে এসআই মিল্টন দে এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, পাহাড় কাটা ও পরিবেশ ধ্বংসকারীর বিরুদ্ধে বন বিভাগ সবসময় কড়া নজরদারী সহ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এ ধরনের কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে পরিবেশ আইনে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সচেতন এলাকাবাসীর মতে পরিবেশ রক্ষা ও দুষনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অবিলম্বে পাহাড় কাটা বন্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নিকট দাবী জানিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: